ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছে হাজার হাজার মানুষ। সকাল থেকেই কমলাপুর রেলস্টেশনে যাত্রীদের ভিড় লক্ষ করা গেছে। ট্রেন ধরতে স্টেশনে ছুটে এসেছেন অনেকেই। যাত্রা নির্বিঘ্ন করতে টিকিট ছাড়া যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করেছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
সকালে স্টেশনে গিয়ে দেখা গেছে, ট্রেন ছাড়ার ঘণ্টাখানেক আগেই প্ল্যাটফর্ম ও স্টেশনের প্রবেশপথে যাত্রীদের ভিড় বাড়ছে। বেশির ভাগ ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে। এ ছাড়া যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে শুধু টিকিটধারী যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। যাঁদের টিকিট নেই, তাঁদের বাইরে থেকেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং স্ট্যান্ডিং টিকিট কাটার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
এ ছাড়া স্টেশনের প্রবেশপথ ও প্ল্যাটফর্মে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত রেল পুলিশ (জিআরপি) ও র্যাব সদস্য। ব্যাগ তল্লাশি, মেটাল ডিটেক্টর ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে নিয়মিত। এ ছাড়া রেল স্টেশনের আশপাশেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
মিরপুর থেকে আসা এক যাত্রী সোনিয়া আক্তার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সময়মতো ট্রেন ধরতে দৌড় দিতে হয়েছে। স্টেশনে এত ভিড়, বাচ্চা নিয়ে খুবই কষ্ট হয়েছে। কিন্তু বাড়ি তো যেতেই হবে।’
এদিকে স্ট্যান্ডিং টিকিটের কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের বেশ ভিড় দেখা গেছে। ট্রেন ছাড়ার আগে এই টিকিট দেওয়া হচ্ছে। কোচের মধ্যেও দাঁড়ানো যাত্রীদের আনাগোনা দেখা গেছে।
নাটোরগামী আরমান হোসেন নামের এক যাত্রী জানান, ‘আগে টিকিট পাইনি, এখন বাধ্য হয়ে স্ট্যান্ডিং টিকিট কেটে যাচ্ছি।’
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ৪ থেকে ৬ জুন এই তিন দিনই যাত্রীর সর্বোচ্চ চাপ থাকবে। কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের যথাসময়ে স্টেশনে উপস্থিত হতে এবং টিকিট ছাড়া স্টেশনে না আসার অনুরোধ জানিয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কমলাপুর রেলস্টেশনে ম্যানেজার মো. সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘কাল থেকে যেহেতু সরকারি ছুটি শুরু হচ্ছে, ফলে স্টেশনে ঘরমুখী যাত্রীর ভিড় বেড়েছে। তবে আমরা ধারণা করছি, আজ বুধবার অফিস শেষে বিকেলের পরে থেকে চাপ আরও বাড়বে এবং এই চাপ আগামীকাল পর্যন্ত থাকবে। এখন পর্যন্ত টিকিট ছাড়া কোনো যাত্রীকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।’
ম্যানেজার আরও জানান, ‘নির্ধারিত সময়েই ছেড়েছে সব ট্রেন। এখন পর্যন্ত যাত্রীরা নির্বিঘ্নে ট্রেনে যাত্রা করতে পারছেন।’
এবার ঈদে প্রতিদিন সারা দেশে ৪৩টি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করছে। এসব ট্রেনের মোট আসন প্রায় ৩৩ হাজার ৩১৫টি। এর বাইরে প্রতিটি ট্রেনের ২৫ শতাংশ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে স্টেশনের কাউন্টার থেকে। এ ছাড়া ১০টি স্পেশাল ট্রেন চলছে। আজ ৪ জুন থেকে স্পেশাল ট্রেন চলাচলও শুরু হয়েছে।