আজকের আবহাওয়ার খবর বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপ আজ সন্ধ্যা সাতটার দিকে সাতক্ষীরা ও আশপাশের এলাকায় স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসেবে অবস্থান করছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এটি ধীরে ধীরে আরও দুর্বল হয়ে যেতে পারে, তবে তার প্রভাবে দেশের অন্তত ১৪টি জেলার উপকূলীয় অঞ্চল ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে গভীর নিম্নচাপটি সাতক্ষীরা অঞ্চলে প্রবেশ করে। বর্তমানে এটি আরও উত্তর বা উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছে। এতে করে উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়ার সঙ্গে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
সমুদ্রবন্দরগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রাকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ সতর্কতা অনুযায়ী, নৌযানগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে এবং মৎস্যজীবীদের গভীর সাগরে না যাওয়ার নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
অমাবস্যার প্রভাবে আজকের জোয়ারের পানি আরও উচ্চতায় উঠেছে, যার ফলে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, ভোলা, পটুয়াখালী, খুলনা, সাতক্ষীরাসহ একাধিক জেলার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বিশেষ করে হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ এবং নতুন চরগুলো টানা বৃষ্টিপাত ও জোয়ারে তলিয়ে গেছে। স্থানীয় প্রশাসন ইতোমধ্যে ১১৭টি সাইক্লোন সেন্টার এবং ২৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে।
হাতিয়া উপজেলার ইউএনও মো. আলাউদ্দিন জানিয়েছেন, রেড ক্রিসেন্টসহ উদ্ধারকর্মীরা সার্বক্ষণিক প্রস্তুত আছে। এছাড়াও নদ-নদীর পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় কিছু নিম্নাঞ্চলে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে।
বৈরী আবহাওয়ার কারণে ঢাকা নদীবন্দর সদরঘাট থেকে লঞ্চ চলাচল সাময়িক বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক মুহম্মদ মোবারক হোসেন জানিয়েছেন, আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে লঞ্চ চলাচল পুনরায় শুরু হবে।
সদরঘাটে টার্মিনালে যাত্রীদের চাপ বাড়ছে, কেউ কেউ ফিরে যাচ্ছেন, কেউবা অপেক্ষা করছেন বা টিকিটের তারিখ পরিবর্তন করছেন। এ পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে দুর্ভোগ বাড়ছে।
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার উন্নতির সম্ভাবনা নেই। বরং গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে, যার ফলে আরও ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাস ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে নিয়মিত তথ্য গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আজকের আবহাওয়ার খবর নিয়ে আমরা যে সতর্কতা ও প্রস্তুতির কথা বলেছি, তা বাস্তব পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দুর্যোগকালীন এই সময়ে সচেতনতা, তথ্য জানা ও প্রস্তুত থাকা আমাদের সবার দায়িত্ব।