বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে সারা দিন-রাত বৃষ্টি হয়। দুই দিনের বৃষ্টিতে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকার সড়ক পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এই অবস্থায় প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বের হওয়া মানুষদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
আবহাওয়া অফিস বলছে, আবহাওয়ার এই অবস্থা অপরিবর্তিত থাকবে চলতি সপ্তাহে। তাই ভারী বর্ষণ কমার আপাতত কোনো সুসংবাদ নেই।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা বলেন, আবহাওয়ার এই পরিস্থিতি চলতি সপ্তাহে অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এর মধ্যে রাজশাহী বাদে দেশের সাতটি বিভাগেই অনেক জায়গায় আগামী ২৪ ঘণ্টা ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। ভারী বর্ষণের ফলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর থেকে আসাদ গেট পর্যন্ত সড়কে গতকাল রাতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। আজ সকালেও ধানমন্ডির ২৭ নম্বরে পানি দেখা যায়। এতে গাড়ি চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়। গাড়ির ধীরগতির কারণে সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সতর্কবার্তায় নেই সুসংবাদ। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলাসমূহে ভারী ঢলে কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশের সব সমুদ্রবন্দর এলাকায় ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
একই রকম অবস্থা রাজধানীর কারওয়ান বাজারের কাঁচাবাজারের সামনের রাস্তায়। সেখানে এখনো জমে আছে বৃষ্টির পানি। কাঁচাবাজারের চারদিকের প্রতিটি রাস্তায় বৃষ্টির পানির কারণে কাদা জমে আছে। এতে মানুষের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টিতে পানিবন্দী ছিল নিউমার্কেট এলাকা। আজ বিকেলে ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের ভেতরের পানি জমে থাকতে দেখা গেছে। মার্কেটের ১ নম্বর গেটে পাম্প বসিয়ে পানি সরানোর চেষ্টা করেন দোকানমালিকেরা।
ষ্টিতে জমে থাকা কাদাপানির কারণে চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানান কারওয়ান বাজারে বাজার করতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, ‘গতকালের বৃষ্টির প্রভাব আজও যায়নি, পুরো কারওয়ান বাজারের চারদিকের রাস্তাঘাট কাদা হয়ে আছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার করতে কারওয়ান বাজারে এসে বিপাকে পড়েছি।’
একই রকম অবস্থা মতিঝিল, রাজারবাগ, শাহজাহানপুর, খিলগাঁও, কমলাপুর, মুগদা, বাসাবোসহ রাজধানীর প্রায় বেশির ভাগ এলাকায়। ব্যস্ত শহরে বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতায় থমকে গেছে। জলাবদ্ধতায় বিপাকে নগরের লাখ লাখ শ্রমজীবী মানুষ।
সড়কে জলাবদ্ধতায় আজ দুপুরে মালিবাগ মোড়ে একটি চায়ের দোকানের সামনে রিকশা নিয়ে বসে আছেন আব্দুল মালেক। প্যাডেলচালিত এই রিকশাচালক আক্ষেপ করে বললেন, ‘আমার গাড়ি পাইড়া চালাই, বৃষ্টি পানিতে যাইতে পারি না। আধা বেলায় খ্যাপ মারছি তিনডা (তিনটা), জমার টাকাই উডে নাই (উঠে) নাই।’
দুই দিনের বৃষ্টিতে রিকশাচালক মালেকের মতো অবস্থা অনেক চালক ও দিনমজুরের। আবহাওয়ার অবস্থা পরিবর্তন না হলে বিপাকে পড়বেন তাঁরা। তবে আবহাওয়া অফিস কোনো ভালো খবর দিতে পারেনি।