খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছে শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্বার বাংলা সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে প্রধান ফটক সংলগ্ন কুয়েট উড পাদদেশে বিক্ষোভ মিছিল করে।
এরপর সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা মশাল মিছিলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে গিয়ে প্রেস ব্রিফিং করে।
এসময় শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, গতকাল কতিপয় শিক্ষক আমাদের বিরুদ্ধে কর্মচারী কর্মকর্তাদের সঙ্গে মানববন্ধনে দাঁড়িয়েছেন। আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- আমাদের সংগ্রাম শিক্ষকদের বিরুদ্ধে নয়। তারা আমাদের পিতৃতুল্য। আমাদের যদি ভুল হয়ে থাকে আপনারা আমাদের ক্ষমা করবেন। কিন্তু আমরা ব্যথিত আজ দুই মাস ধরেও আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে যারা হামলা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো মানববন্ধন করলেন না। আমাদের নামে মিথ্যা মামলা হলো তাও আমাদের পক্ষে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করলেন না। আর এখন আপনারা আমাদের বিরুদ্ধে কীভাবে গেলেন? যেখানে সারাদেশ আমাদের পক্ষে দাঁড়াচ্ছে।
আমরা আরও দেখলাম আপনাদের সঙ্গে একজন মো. আতাউর রহমান মোড়ল নামে ভাষণ দিলেন। যিনি বিএনপির ২০২৪ সালের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের আপ্যায়ন কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন। আবার একই সঙ্গে বিএনপির যোগীপোল ইউনিয়নের ৩১ সদস্য কমিটির সদস্য। যেইখানে কর্মচারী কর্মকর্তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ সেইখানে সে এখনো কীভাবে চাকরিরত? আর যেই স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা আমাদের আক্রমণ করে। কার চক্রান্তে আমাদের শিক্ষকদের তাদের সঙ্গে দাঁড়া করানো হয়েছে। আমরা তার জবাব চাই?
আমরা আরও দেখেছি শিক্ষকরা যে বলেন, বহিষ্কার হয়েছে সে তালিকা থেকে নাকি সবাই নির্দোষ প্রমাণ হলেও হতে পারে। তাহলে ৫৫ দিন ধরে তদন্ত কমিটি কি প্রহসনের রিপোর্ট বের করল? আমরা চাই সে ৩৭ জনের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করা হোক এবং এতে ছাত্রদলের শিক্ষার্থীরা ব্যতীত নিরীহ কেউ থাকলে তদন্ত কমিটি কেন তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করল তার জবাব দিতে হবে?
আমরা তার সঙ্গে সারা বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাতে চাই আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। আমাদের জন্য বুয়েট, রুয়েট, চুয়েট, ডি ইউ, সি ইউ, ব্রাক এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাঁড়িয়েছেন। তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের সংগ্রাম স্বৈরাচারিতার বিরুদ্ধে। আমাদের বিশ্বাস পুরো দেশ জুলাই আগস্টের পর আর কোনো স্বৈরাচারকে ঠাঁই দেবে না।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, কিন্তু আমরা ব্যথিত কারণ ৫৮ দিন পরেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের দিকে এখনো তাকাচ্ছে না। আমাদের ক্যাম্পাসে রামদা, চাপাতি এমনকি আগ্নেয়াস্ত্র তাক করে গুলি করা হলো তাও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিশ্চুপ ভূমিকা পালন করে। আমাদের নামে মামলা বহিষ্কার হওয়ার পরেও তারা আমাদের দিকে তাকাইনি। যেই আসিফ মাহমুদের জন্য আমরা রাস্তায় নেমে রক্ত দিয়েছি। ওই আসিফ মাহমুদ আমাদের দিকে তাকান। আমরা কিন্তু এখনো রাজপথ ছাড়িনি। কোথায় মাহফুজ আলম? আপনারা দেখেন না আমার ভাইরা কুকুরের সঙ্গে শুয়ে ঘুমিয়ে কাটাচ্ছে।
এসময় শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আপনারা যদি এখনো এই ভিসিকে অপসারণ না করেন তাহলে আমরা ধরে নেব সারা দেশের বিরুদ্ধে গিয়ে ইন্টারিম স্বৈরাচারকে সেইফ গার্ড দিচ্ছে। আর স্বৈরাচার দমানোর জন্য আমরা প্রয়োজনে আবার জুলাই নামাবো।